Posts

Showing posts from July, 2020
প্রিয়....! তোমায় সম্মোধন করার জন্য চমৎকার কোনো শব্দ এই মুহূর্তে মাথায় আসছে না আমার। তাই সম্মোধনটা উহ্য রাখছি। তুমি তো জানো, নীরবতাতেই মিশে থাকে হাজারও আকুতি, হাজারো ভালোবাসা। তাই এই নীরবতা থেকেই নাহয় খুঁজে নাও সেই নাম। চমৎকার সেই সম্বোধন। যে সম্বোধনে কেঁপে উঠবে তোমার বুক। ঠোঁটে ফুঁটবে তৃপ্তির হাসি। আচ্ছা? তুমি-আমি দুজনেই কি এক? যদি একই হই তাহলে কি তোমার স্বপ্নগুলোও আমার স্বপ্নের মতো ধোঁয়াসে? ভীষণ অগোছালো এই মনটা কি হঠাৎ হঠাৎই ভীষণ অভিমানে আমার মতো আরো খানিকটা অগোছালো হয়ে যায়? আমার হয়। খুব করে হয়, জানো? হঠাৎ করে চমকে উঠি। হঠাৎ করেই কান্না পায়। বুকে ব্যাথা হয় তারসাথে অসহনীয় এক শূন্যতা। সেই শূন্য মনে খা খা দুপুর নেমে আসে কখনো বা নামে গাঢ় বর্ষা। দুপুরের প্রখরতায় পুড়ে তামাটে হয় এই মন। বর্ষায় হয় আপ্লুত.... রক্তেভেজা বাণ। বুকের কোথায় যেন তীক্ষ্ণ ব্যাথা হয়। অযথায় কান্নাগুলো গলায় এসে আটকে যায়। ছন্নছাড়া বাতাসে উড়ে চলে লম্বা চুল। উদাসী চোখদুটো বারবার পাতা ঝাপটায় কিন্তু অপেক্ষাটা ফুরায় না। মন বলে এইতো আসবে। এখনই তো সময়। কিন্তু...আসে না। কি আসে না? কেন আসে না?  জানি না। শুধু জানি অপেক্ষাটা ফু...
#এক মুঠো রোদ❤ #লেখিকাঃ নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤ #পর্বঃ ৪৮ ৮৪. ঘড়ির কাটা বারোর ঘরে পড়েছে মাত্র। বাইরে থেমে থেমে বৃষ্টি পড়ছে। "কার্ডিওলজিস্ট স্পেশালাইজ হসপিটাল" এর তিন তলায় নিজের কেবিনে বসে পেশেন্টের পরিবারের সাথে কথা বলছে রাফিন। সামনে বসে আছে ২২/২৩ বছরের একটি মেয়ে আর তার বাবা। কেবিনে এসি চলছে।রাত থেকে বৃষ্টি হওয়ায় পরিবেশটিও বেশ ঠান্ডা। এই ঠান্ডা পরিবেশেও মেয়েটির নাকের ডগায় বিন্দু বিন্দু ঘাম। কেবিনের উজ্জ্বল আলোয় ঘামের বিন্দুগুলো মুক্তোর মতো চিকচিক করছে। মেয়েটির চোখে-মুখে অজানা এক ভয়। রাফিন তীক্ষ্ণ চোখে মেয়েটির দিকে তাকালো। মুহূর্তেই নজর সরিয়ে নিয়ে পাশে বসা মধ্যবয়স্ক লোকটিকে উদ্দেশ্য করে বললো, ---" আপাতত কোনো রিস্ক নেই। তবে আপনারা চাইলে অপারেশনটা করিয়ে নিতে পারেন।" লোকটি ইতস্তত গলায় বললো, ---" অপারেশন না করলে কি চলবে ডক্টর?" ---" চলবে বলতে ছয়মাসের মধ্যে কোনো সমস্যা হবে না। যেহেতু মেডিসিন নিচ্ছেন আর ঠিকঠাকভাবে মেডিসিন নিলে ছয়/সাতমাস ইজিলি কাটিয়ে দিতে পারবেন। এরপর আবারও সমস্যা শুরু হতে পারে। এখন অপারেশনটা করালে রিস্কটা কম থাকবে আর তখন একটু বেশি, ...
# আরশিযুগল প্রেম❤ #লেখিকা-নৌশিন আহমেদ রোদেলা চার. জানালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে শুভ্রতা। টিনের জানালাটা বাতাসের তান্ডবে অদ্ভুত রকম শব্দ করে চলেছে সেই কখন থেকে। কিন্তু সেই শব্দ কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে না শুভ্রতার। দৃষ্টি বৃষ্টিহীন অন্ধকারে স্থির। মাথায় চলছে হাজারো প্রশ্ন। কি হবে এরপর? এই ইন্সিডেন্টের বিয়ের কথাটা কোনোভাবে মা-বাবার কানে গেলে তারা কি ছেঁড়ে কথা বলবে তাকে? সারাজীবন ব্যাপী দিয়ে আসা স্বাধীনতায় তারা কি আফসোস করবে না? তাছাড়া,ছেলেটাই বা কি করবে এবার? সুযোগ পেয়ে হামলে পড়বে না তো তার ওপর। স্বামীর অধিকারের প্রশ্ন তুলে জোরজবরদস্তি করবে না তো?শুভ্রতার ভাবনার মাঝেই ভেতরে ঢুকলো সাদাফ। হাতে ভেজা কাপড়। মাত্রই ভেজা কাপড় বদলেছে সে। একহাতে দরজায় ছিটকানি দিয়ে ঘুরে দাঁড়াতেই কথা ছুঁড়লো শুভ্রতা, ---"দেখুন,বিয়ে হয়েছে মানে যে স্বামীর অধিকার ফলাতে আসবেন তা কিন্তু হবে না। আমি এই বিয়ে মানি না। সো আমার আশেপাশে আসার চেষ্টাও করবেন না।" একদমে কথাগুলো বলে থামলো শুভ্রতা। সাদাফ ভেজা কাপড়গুলো টিনের বেড়ার সাথে ঝুলানো দড়িটাতে মেলে দিয়ে শুভ্রতার দিকে তাকালো। ঘরের এককোণে একটা চার্জার লাইট জ্বালানো।...
# আরশিযুগল প্রেম❤ #লেখিকা-নৌশিন আহমেদ রোদেলা তিন. --- "আপনি বরং পাশের ব্রেঞ্চটাই বসুন। কতক্ষণ আর দাঁড়িয়ে থাকবেন?" শুভ্রতা জবাব দিলো না। একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে পাশে রাখা আধভেজা ব্রেঞ্চটাতে বসে পড়লো। ডানহাতে বামহাতের বাহু ঘষতে ঘষতে মিন মিন করে কিছু একটা বললো কিন্তু সেই কন্ঠ সাদাফের কান পর্যন্ত পৌঁছালো না। পৌঁছানোর কথাও নয়। বৃষ্টির এমন ঝংকারে চিৎকার করে বলা কথাও যেখানে কানে পৌঁছানো দায় সেখানে শুভ্রতার বিরবির কান পর্যন্ত পৌঁছাবে না এটাই স্বাভাবিক। শুভ্রতা এবার গলা পরিষ্কার করে চেঁচিয়ে বললো, ---" আমরা কি ঢাকা থেকে অনেক বেশি দূরে আছি, ভাইয়া?" সাদাফ ঘুরে তাকালো। অন্ধকারে কারো মুখই স্পষ্ট নয়। গলা উঁচিয়ে বললো, --- " ঢাকা থেকে ৯০ কি.মি. দূরে আছি। খুব বেশি দূরে বলতে পারি না।" --- "আচ্ছা? এখানে কোনো হোটেল নেই?" সাদাফ শুভ্রতার অন্ধকারাচ্ছন্ন ঝাপসা মুখের দিকে তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকালো। খানিক নীরব থেকে বললো, --- " উপজেলা শহর যেহেতু হোটেল তো অবশ্যই আছে। কিন্তু কোথায় আছে সেটা বলতে পারছি না। কোথায় দাঁড়িয়ে আছি তাই তো বুঝতে পারছি না।" সা...
# আরশিযুগল প্রেম❤ #লেখিকা-নৌশিন আহমেদ রোদেলা দুই. মাঝরাতে ট্রেন থামলো। গন্তব্যে নয় গন্তব্যের মাঝের কোনো স্টেশনে। বাইরে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।  একটু আগেও ঢালা বর্ষায় মুখর হয়েছে প্রকৃতি। ট্রেনের বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। নিস্তব্ধ রাতটির নিস্তব্ধতাকে চিরে দিতেই কাছের কোনো ডোবায় ডেকে উঠছে ব্যাঙ। প্রায় অাধাঘন্টা হতে চললো ট্রেন ছাড়ার নাম নেই। মাঝরাতে কোনো স্টেশনে এতোক্ষন ট্রেন আটকে রাখার কারণ কি হতে পারে বুঝতে পারছে না শুভ্রতা। সামনে বসা ছেলেটি  হ্যাডফোন কানে দিয়ে সিটে গা হেলিয়ে চোখ বন্ধ করে শুয়ে আছে। শুভ্রতার মনটা কেমন কু’ডাকছে। মাঝরাতে এভাবে ট্রেন থেমে যাওয়ার ব্যাপারটা কিছুতেই হজম হচ্ছে না তার। কই বাবা-মার সাথেও তো রাতের ট্রেনে আসা-যাওয়া করছে সে,এমন তো কখনো হয় নি! শুভ্রতা মুখ কাঁচুমাচু করে জানালাটা হালকা খুলে বাইরে তাকালো। বাইরের অন্ধকার ছাড়া কিছুই চোখে পড়লো না তার। খানিকবাদে সামনে বসে থাকা ছেলেটি নড়েচড়ে বসলো। হ্যাডফোনটা কান থেকে নামিয়ে ভ্রু কুঁচকে ঘড়ির দিকে তাকালো। তারপর কি ভেবে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো। শুভ্রতারও ইচ্ছে করছিলো বাইরে গিয়ে দাঁড়াতে কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর সাহস করে উঠতে...
# আরশিযুগল প্রেম❤ #লেখিকা-নৌশিন আহমেদ রোদেলা #সূচনা পর্ব এক. বর্ষার মাঝামাঝি সময়। দিন-রাত আঁধার করে আনা বৃষ্টি। রেলস্টেশনের সামনের কিছুটা জায়গাও কর্দমাক্ত। শুভ্রতা একহাতে স্কার্ট সামলে অন্যহাতে ভারি স্যুটকেস নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। মনটা ধুকপুক করছে তার। মনে হচ্ছে,  এই বুঝি লাগেজ হাতে পা পিছলে পড়বে সে। খুব সাবধানে কাঁদামাখা জায়গাটুকু পাড় হয়ে রেলস্টেশনের প্ল্যাটফর্মে দাঁড়ালো।  গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিতে গায়ের টপসটাও অনেকটা ভিজে এসেছে তার। স্কার্টটা দু'হাতে ঝেড়ে নিয়ে বামহাতে পড়া ঘড়ির দিকে তাকালো সে ---- ৯ঃ৩০। চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী "মহানগর এক্সপ্রেস" স্টেশন ছাড়ার কথা সাড়ে নয়টায়। অথচ এখনও ট্রেন আসার নামগন্ধ নেই। শুভ্রতা বিরক্ত ভঙ্গিতে পিলারে ঠেস দিয়ে বাইরের বৃষ্টির দিকে তাকালো। কিছুক্ষণের মাঝেই যে মুষলধারে বৃষ্টি শুরু হবে তারই পূর্বাবাস দিচ্ছে প্রকৃতি। ইংরেজিতে এই বৃষ্টিকে বলে "কেটস এন্ড ডগস্"। মুষলধারার বৃষ্টির সাথে কুকুর বিড়ালের কি সম্পর্ক জানা নেই শুভ্রতার। শুভ্রতা কপাল কুঁচকে আকাশের দিকে তাকায়। রাতের অন্ধকার আকাশকে চিরে দিয়ে ঘন ঘন বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে। সাথে সাথেই চারপ...
#এক মুঠো রোদ❤ #লেখিকাঃ নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤ #পর্বঃ ৪৯ ৮৫. গাড়ির ডেকের উপর বসে আছে রোজা। খানিকটা দূরেই গাড়িতে ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মৃন্ময়। রোজার লেপ্টে যাওয়া কাজল আর ভেজা স্নিগ্ধ মুখটার উপরই ঘুরে বেড়াচ্ছে তার মুগ্ধ দৃষ্টি। বেশ কিছুক্ষণ একইভাবে তাকিয়ে থাকার পর অধৈর্য গলায় বলে উঠলো মৃন্ময়, ---" পাঁচ বছর একটু বেশি হয়ে যায় না? ডিসিশনটা একটু পাল্টানো যায় না, রোজা?" রোজা স্পষ্ট গলায় বললো, ---" না। যায় না। তিনবছর অনার্স, একবছর মাস্টার্স আর একবছর বাবার অফিসে প্র্যাকটিস। মোট পাঁচবছর। তারপর বিয়ে..." মৃন্ময় একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, ---" পড়াশোনাটা তো তুমি বিয়ের পরও করতে পারবে রোজা। আমি কি তোমাকে আটকাবো? পাঁচ বছর! ওহ্ মাই গড। কিভাবে সম্ভব?" ---" কেন? পাঁচ বছর পর কি আপনার ফিলিংস চেঞ্জ হয়ে যাবে? এইজন্যই বলি নায়করা ভালো না। মেয়ে দেখলেই হামলে পড়া স্বভাব,হুহ।" মৃন্ময় হেসে বললো, ---" একটু কাছে এসে বসো। আমার তো আবার হামলে পড়া স্বভাব। এতো দূরে দূরে বসলে কি চলে? আই এম সো এক্সাইটেড। কি হলো? এসো।" রোজা আরেকটু সরে বসে আড়চোখে তাকালো। মৃন্...
#এক মুঠো রোদ❤ #writer:নৌশিন আহমেদ রোদেলা❤ #পর্ব-৩৫ ৬৫. গাড়ি ছুটেছে থানচির পথে। আঁকা বাঁকা পাহাড়ী রাস্তার প্রতিটি কোণায় যেন নজরকাড়া, মনোমুগ্ধকর। রোজা বিষন্ন মনে, ফাঁকা দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে অদূরে। মাথায় ঘুরছে ভাইয়ের বলা কথা  ----- "তাড়াতাড়ি এসো আপু" । গাড়ি ছাড়ার পনের মিনিটের মাথায় হঠাৎই চেঁচিয়ে উঠলো তীর্থ, ---" আরে, আরে এটা তো শৈলপ্রপাত তাই না?বস? এখানে কি নামা যায় না?" মৃন্ময় আড়চোখে তাকিয়ে হাসিমুখে বললো, ---" শৈলপ্রপাত বর্ষায় দেখতে ভালো লাগে তীর্থ। এখন শুধু জলহীন খা খা পাথর চোখে পড়বে। এছাড়া আর কিছুই নয়।" তীর্থ মুখের ভেতর আওয়াজ তৈরি করে বললো, ---"ওহ!" রোজা আগের মতোই চুপচাপ বসে আছে। মৃন্ময়- তীর্থের কোনো কথায় যেন কান পর্যন্ত পৌঁছোচ্ছে না তার৷ বেশ কিছুক্ষণ চলার পর হুট করেই ব্রেক কষলো গাড়ি। হঠাৎ এমন প্রচন্ড ঝাঁকিতে সামনে হেলে পড়লো তীর্থ-রোজা। বিস্ময় নিয়ে বললো, ---" এটা কি হলো? এভাবে গাড়ি থামালো কেন?" তীর্থ কপালের ডান পাশটায় ডলতে ডলতে বললো, ---"এখনই বাংলা সিনেমার নায়কদের মতো স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলতাম আমি। সাবধানে ...